তরুণদের জন্য এলিজি

তরুণ বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ এ কলকাতা থেকে ঢাকায় এসে নতুন রাজনীতির স্বপ্ন দেখেছিলেন। তরুণদের সংগঠনে পরিণত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৫৪ সালে তরুণরাই হটিয়ে দিয়েছিল স্বৈরাচারী মুসলীম লীগকে। পরম শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমীনকে নির্বাচনে হারিয়ে দিয়েছিলেন আনকোরা নতুন ছাত্রনেতা খালেক নেওয়াজ খান।

১৯৬৬ সালে ছয়দফার জন্য তরুণরাই আত্মত্যাগ করেছে। ১৯৬৯ সালে আমরা যখন একেবারে তরুণ তখন পথে তো আমরাই ছিলাম। ১৯৭১ এর জেনারেশন তো আমরাই। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গরিবরাই ছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে।

শেখ হাসিনা যখন নির্বাসন থেকে ঢাকায় ফেরেন ১৯৮১ সালে তখন তরুণরাই তাকে ঘিরে রেখছিল।

স্বৈরাচারী এরশাদের পতনে মধ্যবয়সী আমাদের সঙ্গে ছিল তরুণরাই ১৯৯০ এ।
তরুণদের একাংশ যেমন প্রক্রিয়াশীল তেমনি বিরাট এক অংশ প্রগতির পক্ষে যারা ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এনেছিলেন শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উন্নয়নের, যুদ্ধপরাধীদের বিচারের এবং দারিদ্র হ্রাসের হাসিনা সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। তরুণদের দিয়েছেন ডিজিটাল প্লাটফর্ম।

আজ প্রতিদিন আন্তর্জাতিক মাধ্যমে দেখি কোনও না কোনও ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মর্যাদা উন্নীত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পর তার কন্যাই পেরেছেন আবারও আমাদের সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে, সম্মান বৃদ্ধিতে, আত্মবিশ্বাসে উন্নীত করতে।

বৃহস্পতিবারই দেখলাম, যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে এখন যুক্তরাষ্ট্র বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ যুক্তরাষ্ট্র ও তার লেজুর যুক্তরাজ্য কয়েকদিন পর তাদের নাগরিকদের সাবধান করে বাংলাদেশে আসতে। যেমন, এখন বিএনপি নেতা নজরুল বলেন জামায়াতে তো মুক্তিযোদ্ধা আছে। যিনি সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সুপারিশ করেছিলেন তিনিই আজ জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সহযোগী বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেজন্য অনেকে তাকে ড. জামায়াত হোসেন বলছেন।

উন্নয়নের চেয়ে আমাদের জেনারেশনের কাছে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জামায়াত-বিএনপির পাকিস্তানীকরণ প্রচেষ্টা প্রতিরোধ। পাকিস্তানিকরণরোধ উন্নয়নে সহায়তা করেছে। পাকিস্তান হচ্ছে ব্যর্থতার প্রতীক। আমাদের দেশে পাকিস্তানিকরণের এজেন্ট বিএনপি জামায়াত এর সদস্য ও সমর্থকরা। পাকিস্তান এখন এমন অতল গহ্বরে যে শেখ হাসিনাকে তারা চাচ্ছেন তাদের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে। বিজয়ের মাসে এর চেয়ে বড় বিজয় আর কী হতে পারে?

এ নির্বাচন ১৯৭০ এর মতো। ১৯৭০ এ তরুণদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তারা পাকিস্তানের অন্ধকারে থাকতে চায় না কি, রৌদ্রজ্জ্বল বাংলদেশের দিকে এগোতে চায়। তারা সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেনি। আজও পরিস্থিতি সেরকম। ড. জামায়াত হোসেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ধানের শীষে লুকানো জামায়াতের নেতৃত্বে তরুণরা সেই অন্ধকার পাকিস্তানে ফিরে যেতে চায়, নাকি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রোদেলা আকাশের নিচে সবাইকে জড়ো করতে চায়? সিদ্ধান্ত তরুণদের।

বিএনপি জামায়াতের নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি সপরিবারে বঙ্গবন্ধু খুন, ১৯৭১ ও ১৯৭৫ এর খুনিদের পুনর্বাসন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের অগ্নি সন্ত্রাসে মানুষ পুড়িয়ে মারা, নিরাপত্তারক্ষীদের খুন, মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারের বিরোধিতা করা, বাংলা ভাইয়ের উত্থান, শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড মেরে হত্যার প্রচেষ্টা, দুর্নীতিতে বিশ্বের এক নম্বর… না, এ তালিকা শেষ করা যাবে না। আর প্রবৃদ্ধিতে নিম্নগামী। এক কথায় তরুণদের জন্য অন্ধকার বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণার উজ্জীবন, ১৯৭৫ এর খুনিদের বিচার, অহেতুক কারণে নির্যাতন বন্ধ এবং যারা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত যেমন মানুষ ও পুলিশ হত্যাকারীদের বিচার (যাকে জামায়াত বিএনপি মনে করে বিরোধীদের নির্যাতন, মানবতাবিরোধিদের অপরাধ বিচার)। খালেদা তারিকের মতো গ্রেনেড সন্ত্রাস না করে, জঙ্গি মৌলবাদ দমন, দূর্নীতিতে এক নম্বর না হওয়া এবং উন্নয়ন এবং ডিজিটাল বাংলদেশ উপহার। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ১০টি রাষ্ট্রের ভেতর। যে ভিত তিনি গড়ে দিয়েছেন তা তরুণদের ভবিষ্যত। তাই এখন বলতে হয় ড. জামায়াত, ফখরুল বা এরশাদের বিকল্প আছে বা বিকল্পের বিকল্প আছে কিন্তু শেখ হাসিনার বিকল্প নেই অন্তত তরুণদের জন্য।

শেখ হাসিনা নতুন বছরের প্রথম দিন না থাকলে আমাদের এই চেনা রাজধানী ঢাকা আর ঢাকা থাকবেনা। বাংলাদেশ প্রিয় বাংলাদেশ আর রোদেলা বাংলাদেশ থাকবেনা, এখানে ঘোর আমাবস্যা, শেখ হাসিনা না থাকলে বসন্তে আর ফুল ফুটবে না। চরাচর হবে খরার দিন, নদী হারাবে মরু পথে।

সুভাস মুখোপাধ্যায়ের ভাষায় বলতে হয়- ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত’।

রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বলতে পারবো- ‘এ ঘন ঘোর বরিষায়’, কৃষক বুনবে বীজ সবুজ ফসলের প্রত্যাশায়, নদী হবে কল্লোলিনী, ঢাকা হবে তিলোত্তমা, বাংলাদেশ ভরে যাবে শীতের মনোরম কমলা রংয়ের রোদে। বাংলাদেশ হবে মধ্য আয়ের দেশ, যা হবে তরুণদের ভবিষ্যত। তাই তরুণদের স্লোগান হওয়া উচিত তরুণ ছিলেন অতীতে, আছেন এখনও, হাসিনার সঙ্গে থাকবেন ভবিষ্যতেও। শেখ হাসিনা ছিলেন, শেখ হাসিনা আছেন, শেখ হাসিনা থাকবেন যাতে ভবিষ্যতে আমরা খোলা গলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে দরাজ গলায় বলতে পারি, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

https://goo.gl/xrrvi5

Add Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *